Summary
মানুষের পাঠানো কৃত্রিম উপগ্রহগুলো পৃথিবীকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘোরে। এগুলো রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয় এবং চাঁদের তুলনায় ছোট এবং নিচু কক্ষপথে অবস্থান করে। কৃত্রিম উপগ্রহের দ্রুতি উচ্চতার সাথে সম্পর্কিত, অর্থাৎ উচ্চতা বাড়লে দ্রুতি কমতে থাকে।
মহাকাশযাত্রার ইতিহাস ১৯৫৭ সালে সোভিয়েট ইউনিয়নের স্পুটনিক-১ এর মাধ্যমে শুরু হয়। স্পুটনিকের পর সোভিয়েট ইউনিয়ন আরও স্পুটনিক-২ উৎক্ষেপণ করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ এক্সপ্লোরার-১ উৎক্ষেপণ করে ১৯৫৮ সালে।
যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল:
- ১৯৬১ সালে ইউরি গ্যাগারিন প্রথম মানুষ হিসেবে মহাকাশে যান ভস্টক-১ কৃত্রিম উপগ্রহে।
- ১৯৬৩ সালে ভেলেনটিনা তেরেসকোভা প্রথম মহিলা হিসেবে মহাকাশে যান।
- ১৯৭২ সালে ল্যান্ডসেট-১ প্রথম দূর অনুধাবনের জন্য পাঠানো উপগ্রহ।
- ১৯৭৫ সালে অ্যাপোলো-সয়োজ টেস্ট প্রজেক্ট নামে কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে প্রেরিত হয়।
বর্তমানে বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে রয়েছে, যাদের মধ্যে শতাধিক অপারেটিং এবং হাজার হাজার অব্যবহৃত উপগ্রহ বা অংশ মহাকাশে ধ্বংসাবশেষ হিসেবে ঘোরছে।
মানুষের পাঠানো যেসব বস্তু বা মহাকাশযান পৃথিবীকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরে তাদের বলা হয় কৃত্রিম উপগ্রহ। রকেটের সাহায্যে এদের উৎক্ষেপণ করা হয়। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ টানের প্রভাবে চাঁদের মতো এরা এদের কক্ষপথে ঘুরে । কৃত্রিম উপগ্রহ চাঁদের তুলনায় অনেক ছোট এবং চাঁদের তুলনায় অনেক নিচু দিয়ে পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে। নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরার জন্য এদের প্রয়োজনীয় দ্রুতি থাকতে হয়। পৃথিবী থেকে কৃত্রিম উপগ্রহের উচ্চতা যত বেশি হবে তার দ্রুতি হবে তত কম। ফলে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে এরা বেশি সময় নেবে। আমরা জানি পৃথিবী ২৪ ঘণ্টায় এর নিজ অক্ষের চারদিকে একবার পাক খায়। সুতরাং, কোনো কৃত্রিম উপগ্রহ যদি ২৪ ঘণ্টায় পৃথিবীর চারদিকে একবার ঘুরে আসে তাহলে একে পৃথিবী থেকে স্থির বলে মনে হবে।
কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাকাশ যাত্রার ইতিহাস খুব একটা পুরোনো নয়, একেবারেই নতুন। তোমরা জেনে অবাক হবে যে, মহাকাশযাত্রার প্রথম পদক্ষেপটির সূচনা হয়েছিল ১৯৫৭ সালের ৪ঠা অক্টোবর। এই যাত্রার সূচনা করে তৎকালীন সোভিয়েট ইউনিয়ন। তারা স্পুটনিক-১ নামক কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করে। স্পুটনিক শব্দের অর্থ হলো ভ্রমণসঙ্গী। একই বছর ২রা নভেম্বর স্পুটনিক-২ নামক আরেকটি কৃত্রিম উপগ্রহ তারা মহাকাশে পাঠান। প্রথম মার্কিন কৃত্রিম উপগ্রহের নাম এক্সপ্লোরার-১। এই উপগ্রহ ১৯৫৮ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি মহাকাশে পাঠানো হয়। ভস্টক-১ নামক সোভিয়েট কৃত্রিম উপগ্রহ মানুষ নিয়ে প্রথম পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। যে মানুষটি প্রথম মহাকাশে গিয়েছিলেন তার নাম সোভিয়েট ইউনিয়নের ইউরি গ্যাগারিন। তিনি ১৯৬১ সালের ১২ই এপ্রিল ভস্টক-১ কৃত্রিম উপগ্রহে চড়ে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করেন। ভস্টক-৬ নামক কৃত্রিম উপগ্রহে (মহাকাশযান) চড়ে প্রথম সোভিয়েট নারী মহাকাশচারি ভেলেনটিনা তেরেসকোভা মহাকাশে ঘুরে আসেন ১৯৬৩ সালে। ইনটেলসেট-১ কৃত্রিম উপগ্রহকে পাঠানো হয় বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য যোগাযোগ উপগ্রহ হিসেবে। রিমোটসেনসিং বা দূর অনুধাবনের জন্য পাঠানো প্রথম উপগ্রহ হলো ল্যান্ডসেট-১। একে পাঠানো হয় ১৯৭২ সালে। আন্তর্জাতিক যোগসূত্র স্থাপনের জন্য অ্যাপোলো-সয়োজ টেস্ট প্রজেক্ট নামে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে প্রথম পাঠানো হয় ১৯৭৫ সালে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এ পর্যন্ত হাজার হাজার কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়েছে। কয়েক শত কৃত্রিম উপগ্রহ বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং হাজার হাজার অব্যবহৃত কৃত্রিম উপগ্রহ বা তাদের অংশবিশেষ মহাকাশ ধ্বংসাবশেষ হিসেবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে।
Read more